Category Archives: বিষয় ভিত্তিক আর্টিকেল

আশুরার তাৎপর্য

আশুরার তাৎপর্যঃ 

আবদুল্লাহ্‌ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হিজরতের পর দেখলেন মদীনার ইহুদীগণ আশুরার রোজা পালন করছে। তিনি এর উদ্দেশ্য সম্পর্কে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলে তারা জবাব দিল- ইহা একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিনে আল্লাহ্‌ তাআলা মূসা (আঃ) এবং তাঁর জাতিকে মুক্তি দিয়েছিলেন, আর ফেরাউন এবং তার অনুসারীদেরকে (নীল নদে) ডুবিয়ে মেরেছিলেন। বাকিটুকু পড়ুন

জাহেলিয়াত

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

 সমস্ত প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য এবং তাঁর সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ওপর বর্ষিত হোক শান্তি ও কল্যাণ এবং কিয়ামত পর্যন্ত যারাই সত্যের পথ অবলম্বন করবে তাদের ওপর (শান্তি ও কল্যাণ বর্ষিত হোক)।

১৪০০ বছর আগে যখন ইসলামের আবির্ভাব হয় তখনকার সময়কে বলা হত জাহেলিয়াত। মানুষ জাহেলিয়াত ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করত। ইসলামপূর্ব বা অনৈসলামিক চিন্তাচেতনা ও ভুলত্রুটিকে জাহেলিয়াতের অংশ মনে করা হত। জাহেলিয়াতের শাব্দিক অর্থ ‘অজ্ঞতা’ যা আরবী জাহ্ল শব্দ থেকে এসেছে। তবে এক্ষেত্রে অজ্ঞতা বলতে নিরক্ষরতা বোঝানো হতো না। সেসময় আরবে মুখে মুখেই বেশীর ভাগ কাজ সম্পন্ন হত। সমাজ-সভ্যতা গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞানের অভাবও জাহেলিয়াত নয়। বাকি টুকু পড়ুন

শাবান মাস (সুন্নত ও বিদ’আত)

শাবান মাস:

 সুন্নত উপেক্ষিত বিদআত সমাদৃত। 

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।

প্রাণ প্রিয় ভাই, রামাযানুল মোবারকের প্রস্তুতির মাস শাবান আমাদের মাঝে উপস্থিত। এ মাসে আমাদের জন্য রয়েছে কিছু করণীয়। রয়েছে কিছু বর্জনীয়। এ বিষয়টি নিয়েই আজকের এই পোস্টের অবতারণা। এতে মোট ৭টি বিষয় আলোচিত হয়েছে।  যথা:

১) শাবান মাসে নফল রোযা রাখা সম্পর্কে বর্ণিত সহীহ হাদীস সমূহ।

২) শাবান মাসের পনের তারিখের ব্যাপারে একটি হাদীস পর্যালোচনা ও তার শিক্ষা।

৩) শাবান মাস সম্পর্কে কতিপয় প্রচলিত জাল ও যঈফহাদীস|

৪) কুরআন কোন রাতে অবর্তীণ হয়? শাবান মাসের শবে বরাতে নাকি রামাযান মাসের শবে কদরে?

৫) শবে বরাত উদ্‌যাপন করা বিদআত।

৬) শাবান মাসে প্রচলিত কতিপয় বিদআত।

৭) সারাংশ।

১) শাবান মাসে নফল রোযা রাখা সম্পর্কে বণির্তসহীহ হাদীস সমূহ:

শাবান মাসে নফল রোযা রাখা সম্পর্কে অনেক সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। নিন্মে এ সম্পর্কীত কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করা হল:

ক) আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন (নফল) রোযা রাখতে শুরু করতেন তখন আমরা বলতাম যে তিনি রোযা রাখা আর বাদ দিবেন না। আবার যখন রোযা বাদ দিতেন তখন আমরা বলতাম তিনি আর রোযা করবেন না। তবে তাঁকে রামাযান ছাড়া পরিপূর্ণভাবে অন্য কোন মাসে রোযা রাখতে দেখিনি এবং শাবান মাসের চেয়ে অন্য কোন মাসে এত বেশি রোযা রাখতে দেখিনি।” (বুখারী, কিতাবুস্‌ সাওম। মুসলিম, কিতাবুস সিয়াম)

খ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শাবান মাসের চেয়ে অধিক রোযা আর কোন মাসে রাখতেন না। তিনি (প্রায়) পুরো শাবান মাস রোযা রাখতেন। তিনি বলতেন: “তোমরা এমন আমল গ্রহণ কর যা তোমাদের সাধ্যের মধ্যে থাকে। কারণ, আল্লাহ তাআলা বিরক্ত হন না যতক্ষণ না তোমরা বিরক্ত হও। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট এমন নামাযই পছন্দনীয় যা নিয়মিতভাবে আদায় করা হয় যদিও তা সল্প হয়। তাঁর নিয়ম ছিল, যখন তিনি কোন নামায পড়তেন নিয়মিতভাবে তা পড়তেন।(বুখারী, কিতাবুস্‌ সাওম। মুসলিম, কিতাবুস সিয়াম)

গ) উসামা বিন যায়দ (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল, আপনাকে শাবান মাসে যে পরিমান রোযা পালন করতে দেখি অন্য মাসে তা দেখি না। বাকিটুকু পড়ুন

বাউল প্রসঙ্গ

বাউলদের  বিচিত্র জীবন চিত্রঃ   

এদেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে বাউল সম্প্রদায় সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না থাকায়, অনেক ধর্মপ্রাণ মুসলিমও ধর্মবিবর্জিত বিকৃত যৌনাচারী মুসলিম নামধারী বাউলদেরকে সূফী-সাধকের মর্যাদায় বসিয়েছে। মূলতঃ বিকৃত যৌনাচারে অভ্যস্ত ভেকধারী এসব বাউলরা তাদের বিকৃত ও কুৎসিত জীবনাচারণকে লোকচক্ষুর অন্তরালে রাখার জন্য বিভিন্ন গানে মোকাম, মঞ্জিল, আল্লাহ, রাসূল, আনল হক, আদম-হাওয়া, মুহাম্মদ-খাদিজাসহ বিভিন্ন আরবী পরিভাষা, আরবী হরফ ও বাংলা শব্দ প্রতীকরূপে ইচ্ছাকৃতভাবেই ব্যবহার করেছে। এদেশে বহুল প্রচলিত একটি লালন সঙ্গীত হলো,

“বাড়ির পাশে আরশি নগর/সেথা এক পড়শী বসত করে,

আমি একদিনও না দেখিলাম তারে”

এই গানটিকে আমাদের সমাজে খুবই উচ্চমার্গের আধ্যাতিক গান মনে করা হলেও, এটি মূলত একটি নিছক যৌনাচারমূলক গান, যাতে আরশিনগর, পড়শী শব্দগুলো প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে তাদের বিকৃত জীবনাচারকে গোপন রাখার উদ্দেশ্যে। (বা.বা পৃঃ ৩৬৮-৩৬৯)

বাউল প্রসঙ্গে নতুন করে সামনে চলে এসেছে। পাংশা উপজেলার আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং কয়েকজন মাদ্রাসা শিক্ষক কিছু বাউলকে তওবা পড়ান এবং তাদের লম্বা গোঁফ ও চুল কেটে দেন।

একটি জাতীয় দৈনিকে একজন কলাম লেখক ইতিহাস থেকে বাউলদের তওবা পড়ার কয়েকটি উদাহরণ দিয়েছেন যা ঘটেছিল ১৯৩২ সালে, ১৯৪২ এবং ১৯৮৪ সালে। প্রায় একশত বছরের এ রকম কয়েকটি ঘটনাকে ব্যাতিক্রম হিসাবে গন্য করা যায়, তবে এ কথা বিবেচনা যোগ্য যে বাবুলরা যেহেতু মুসলিম নামধারী সেহেতু তাদেরকে মুসলিম সমাজ কিছুটা নিয়ন্ত্রন করবেই, সামাজিক নিয়ন্ত্রন বিষয়টি অস্বীকার করা যাবে না, সমাজ অস্বাভাবিক কাজ গ্রহণ করেনা।

লেখক বাউলদের অনেক প্রশংসা করেছেন, তার ভাষ্য মতে “তাদের দ্বারা বাংলাদেশে এক মানবতাবাদী এক জাগরণ ঘটে” “তাদের হাত ধরেই কৃষক সমাজের মধ্যে ঘটেছিল দেশজ রেঁনেসা” “বাউলরাই হচ্ছে আমাদের আদর্শ নারী পূরুষ”।                                              এ সবই হচ্ছে অতিরঞ্জিত কথা। লালন নিজে সংগীতের ক্ষেত্রে অনেক অনেক বড়। কিন্তু সাধারণ বাউররা তা নয়। তারা অস্বাভাবিক জীবন যাপন করে, তারা অপরিচ্ছসন্ন তাকে, অবাধ যৌনাচারে বিশ্বাস করে, তাদের পূরুষরা হায়েজের রক্তপান বৈধ মনে করে। তাদের নারীরা পূরুষের বীর্যপান বৈধ মনে করে।

বাউলরা কখনই কোন আদর্শ নয়, তারা সাধারণ মানুষ, তারা সভ্যতার কিছুই জানে না। তারা সত্যিকার অর্থে কোন ধার্মিক লোকও না। কিন্তু একথা অবশ্যই বলতে হবে যে, এসব নিরীহ লোকদের উপর কোনো অত্যাচার বৈধ হতে পারেনা, যা করতে হবে মুসলিম সমাজকে তা বৈধ ভাবে করতে হবে।

একজন ব্লগার বলেছেন, আমার বাড়ির পাশে এক বাউল ছিল। বাকি টুকু পড়ুন

সাফল্যের পথ

সাফল্যের সরল সহজ পথ 

প্রিয় বন্ধু, মানুষ জীবনে সফল হওয়ার জন্য কতই না পথ অবলম্বন করে? কিন্তু আল্লাহ তায়ালার নির্দেশিত পদ্ধতি ব্যতিরেকে মুসলিম জীবনের প্রকৃত সফলতা অর্জন করা কি আদৌ সম্ভব? না।  আল্লাহ তায়ালার নির্ধারিত মানচিত্র অনুসরণ করা ব্যতিরেকে সেই সাফল্যের স্বর্ণ দুয়ারে পৌঁছা আদৌ সম্ভব নয়। তাই আসুন, আল্লাহর নির্ধারিত সাফল্যের পথের পরিচয় নেয়ার চেষ্টা করি মসজিদে নববীর সম্মানিত ইমাম ও খতীব ডঃ আবদুল মুহসিন বিন মুহাম্মাদ আল কাসেম এর কলাম থেকে—

সৌভাগ্যের পথ:
মহান আল্লাহর পরিপূর্ণ ইবাদতের মাঝেই রয়েছে বান্দার প্রকৃত সাফল্য ও সৌভাগ্য। ইবাদত তখনই প্রকৃত ও সঠিক হবে, যখন বান্দা আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তথা এখলাসের সাথে এবং নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর নির্দেশিত পথে তা সম্পাদন করবে। কেননা বান্দার ইবাদত আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে না হলে তা বিনষ্ট। আল্লাহ্‌ বলেন: وَقَدِمْنَا إِلَى مَا عَمِلُوا مِنْ عَمَلٍ فَجَعَلْنَاهُ هَبَاءً مَنْثُورًا “আমি (কিয়ামত দিবসে) তাদের কৃতকর্মগুলো বিবেচনা করবো, অতঃপর সেগুলোকে বিক্ষিপ্ত ধূলি-কণায় পরিণত করবো।” (সূরা ফুরকান: ২৩)
অনুরূপভাবে ইবাদতটি যদি নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর নির্দেশনা তথা সুন্নত মোতাবেক না হয়, তবুও তা প্রত্যাখ্যাত। তিনি এরশাদ করেন: مَنْ عَمِلَ عَمَلاً لَيْسَ علَيْهِ أمْرُنَا فَهُوَ رَدٌّ “যে ব্যক্তি এমন আমল করবে, যার পক্ষে আমার কোন নির্দেশনা নেই, তা প্রত্যাখ্যাত।” (মুসলিম)
একনিষ্ঠ ভাবে সুন্নত মোতাবেক আমল হলেই তা আল্লাহর দরবারে গ্রহণযোগ্য হবে। আল্লাহ্‌ বলেন: إِنَّ الَّذِينَ آَمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ كَانَتْ لَهُمْ جَنَّاتُ الْفِرْدَوْسِ نُزُلًا “নিশ্চয় যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম সম্পাদন করে, তাদের মেহমানদারীর জন্যে নির্দিষ্ট আছে জান্নাতুল ফেরদাউস।” (সূরা কাহাফঃ ১০৭)

তাওহীদের দু’টি রুকনঃ
ইসলাম ধর্ম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ‘না’ বাচক এবং ‘হ্যাঁ’ বাচক বাক্যের মাধ্যমে। (উহা হচ্ছে লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহ্‌) এ দু’টি ব্যতীত মানুষের ইসলাম বিশুদ্ধ হবে না। ‘না’ বাচক হচ্ছে: (লা- ইলাহা) অর্থাৎ যাবতীয় ইলাহ বা মা’বূদ এবং তাদের অনুসারীদের থেকে নিজেকে মুক্ত করা। বাকি টুকু পড়ুন

মানত করা

মানত সম্পর্কে আমরা কি জানি

মানত কি?

মানত বা মান্নত আমাদের সমাজে বহুল প্রচলিত একটি শব্দ। যেমন আমরা কখনো কখনো বলি, যদি আমি পরীক্ষায় পাশ করি তাহলে মাদরাসায় একটি ছাগল দান করব। এটি একটি মানত।

অতএব, কোনো বিষয় অর্জিত হওয়ার শর্তে কোনো কিছু করার ওয়াদাকে সাধারণত: আমরা মানত বলে থাকি। কেউ বলে মানত, আবার কেউ বলে মান্নত। তবে এটি শর্তযুক্ত মানত।
আবার শর্তহীন মানতও আছে। যেমন, আনন্দের খবর শুনে কেউ বলল, আমি এটা লাভ করেছি? তাই আমি মসজিদে একটি ফ্যান দান করব। এটাও মানত। তবে শর্তহীন।

মানত কাকে বলে? 
আমরা বাংলাতে বলি মানত । আরবিতে বলা হয় نذر (নযর)
বহুবচনে নুযুর।
মানত বা নযরের আভিধানিক অর্থ হল, নিজের দায়িত্বে নেয়া। যা নিজের দায়িত্ব নয় তা অপরিহার্য করে নেয়া।
শরয়ি পরিভাষায় মানত বলা হয় :  নিজের উপর এমন কিছু ওয়াজিব (আবশ্যিক) করে নেয়া যা আসলে ওয়াজিব ছিল না। সেটা শর্তযুক্তও হতে পারে আবার শর্ত মুক্তও হতে পারে।

মানতের হুকুম 
মানত করার বিধান কি? ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাত না মুস্তাহাব? 

আসলে মানত করা ঠিক নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানত করতে নিষেধ করেছেন। তিনি এ ব্যাপারে সব সময় উম্মতদের নিরুৎসাহিত করেছেন। বিষয়টি আমরা অনেকেই জানি না। বরং মনে করি মানত করা খুব সওয়াবের কাজ। আসলে এটি কোনো সওয়াবের কাজ নয়। বরং মাকরূহ। অধিকাংশ ইমাম ও ফেকাহবিদের অভিমত এটাই। কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানত করতে নিষেধ করেছেন। পুরুটা পড়ুন

সফলতার মূল রহস্য

”সফলতা আপনাকে হাতছানি দিয়ে ডাকবে ”

কেউ এমন আছে কি যার মনে উন্নতির খায়েশ নেই? এগিয়ে যাবার ইচ্ছে নেই? সম্মান, সুখ্যাতি ও সম্পদ লাভের আকাঙ্ক্ষা নেই? অবশ্যই না। সবাই চায় জীবনে সফল হতে, প্রাপ্তির আনন্দে অবগাহন করতে। তবে হাজারো লাখো মানুষ আছে যারা শুধু উন্নতির চিন্তাই করে, হদয়ে কেবল স্বপ্নের জালই বোনে; কিন্তু সফলতা তাদের পদ চুম্বন করে না। সাফল্যের সোনার  হরিণ তাদের কাছে ধরা দেয় না। আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি কেন এমন হয়? পৃথিবীতে যারা সফলতার শীর্ষে আরোহণ করেছেন তারা কি ভিন্ন গ্রহের কেউ? উত্তর যদি না হয়, তাহলে কোন জীয়নকাঠির ছোঁয়ায় তাঁরা সাফল্য, খ্যাতি, প্রতিপত্তি ও বিত্তের মালিক হয়েছেন? চলুন সে প্রশ্নের উত্তর খোঁজা যাক। 

হ্যাঁ আল্লাহর বান্দা, আপনিও পারবেন আনন্দ, ভালোবাসা, খ্যাতি, ঐশ্বর্য সবকিছু অর্জন করতে। শুধু তাই নয় আপনি জীবনে সকল চ্যালেঞ্জের মোকাবেলাও করতে পারবেন। সফলতা আপনাকে ধরা দেবার অপেক্ষায়; দরকার শুধু নিজেকে এর জন্য প্রস্তুত করা। তবে প্রস্তুতি এমন হলে চলবে না যে রাতে আপনার মাথায় একটি আইডিয়া এলো অথচ সকালে অতি সাধারণ ব্যস্ততায় ব্রেইন থেকে তা এমনভাবে উধাও হয়ে গেল যেন আপনি নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে কখনো চিন্তাই করেন নি। আসুন আজ আমরা এমন কিছু ফর্মুলা নিয়ে আলোচনা করি যা অনুসরণ করে আপনিও পারেন সফলভাবে সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে।

স্থির সিদ্ধান্ত গ্রহণ : আমরা জীবনে ব্যাপক কোনো পরিবর্তন আনতে সক্ষম হব না যতক্ষণ না কোনো ব্যাপারে স্থির সিদ্ধান্ত ও সঠিক ফয়সালায় পৌছতে পারি। হ্যা, কিছু কিছু ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া যদিও কঠিন হয়ে পড়ে; কিন্তু বারবার চর্চা করলে এর কৌশল রপ্ত হয়ে যায়, তখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া আর কঠিন মনে হয় না। বাকি টুকু পড়ুন

অকাল মৃত্যু

অকাল মৃত্যু বলে কিছু নেই

মিডিয়ার বদৌলতে আজকাল অকাল মৃত্যু শব্দের সঙ্গে কমবেশি সবাই পরিচিত। মিডিয়ায় শব্দটির ব্যবহার এতই অবিরল যে সচেতন অনেক মুসলিমও শব্দটি অবচেতনে উচ্চারণ করে বসেন। কোনো রাজনৈতিক নেতা বা কোনো অঙ্গনের তারকার অপ্রত্যাশিত মুহূর্তে বা অপরিণত বয়সে মারা গেলেই সেটাকে অকাল মৃত্যু হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। দীর্ঘদিন যাবৎ শব্দটি আমাকে পীড়া দিয়ে আসছিল। এ সম্পর্কে কিছু লেখার তাগাদাও বোধ করছিলাম বৈ কি। কিন্তু অনেক বিষয়ের ভীড়ে এতদিন বিষয়টি আড়ালেই ছিল। সম্প্রতি ফেসবুকে এক ভাই এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করায় আবার তাড়না বোধ করলাম এ নিয়ে কিছু লিখতে।

মানুষকে যে মরতে হবে এ বিষয়ে কোনো ধর্মের অনুসারীই এমনকি নাস্তিক বা ধর্মহীন ব্যক্তিও দ্বিমত করেন না। তাই বলা হয় Man is mortel বা মানুষ মরণশীল। আর এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী মুসলিম মাত্রেই আমরা জানি প্রতিটি প্রাণীকে মরতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা যেমন ইরশাদ করেন,

﴿ كُلُّ نَفۡسٖ ذَآئِقَةُ ٱلۡمَوۡتِۖ ثُمَّ إِلَيۡنَا تُرۡجَعُونَ ٥٧ ﴾ [العنكبوت: ٥٧] 

‘প্রতিটি প্রাণ মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করবে, তারপর আমার কাছেই তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে’। {সূরা আল-‘আনকাবূত, আয়াত : ৫৭}

একই বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে আরও একটি আয়াতে। ইরশাদ হয়েছে,

﴿ كُلُّ نَفۡسٖ ذَآئِقَةُ ٱلۡمَوۡتِۗ وَنَبۡلُوكُم بِٱلشَّرِّ وَٱلۡخَيۡرِ فِتۡنَةٗۖ وَإِلَيۡنَا تُرۡجَعُونَ ٣٥ ﴾ [الانبياء: ٣٥] 

‘প্রতিটি প্রাণ মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে; আর ভালো ও মন্দ দ্বারা আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করে থাকি এবং আমার কাছেই তোমাদেরকে ফিরে আসতে হবে’। {সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত : ৩৫}

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আরেক সূরায় ইরশাদ করেন,

﴿ كُلُّ نَفۡسٖ ذَآئِقَةُ ٱلۡمَوۡتِۗ وَإِنَّمَا تُوَفَّوۡنَ أُجُورَكُمۡ يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِۖ فَمَن زُحۡزِحَ عَنِ ٱلنَّارِ وَأُدۡخِلَ ٱلۡجَنَّةَ فَقَدۡ فَازَۗ وَمَا ٱلۡحَيَوٰةُ ٱلدُّنۡيَآ إِلَّا مَتَٰعُ ٱلۡغُرُورِ ١٨٥ ﴾ [ال عمران: ١٨٥] 

‘প্রতিটি প্রাণী মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। বাকিটুকু পড়ুন

গুগল থেকে সাবধান

আজকাল আমরা ইসলাম সম্পর্কে জানার জন্য ইন্টারনেটের উপর অনেকখানি নির্ভর করি। যখনি ইসলামের কোনো নিয়মকানুন, কোনো অনুষ্ঠান, কোনো বিতর্কিত ব্যাপার সম্পর্কে মনে প্রশ্ন জাগে, হয় আমরা ইন্টারনেটে সার্চ করি, না হয় ফেইসবুকে বন্ধু-বান্ধবকে জিজ্ঞাসা করি। শেখ্‌ Google যেহেতু আমাদেরকে বিজ্ঞান, গণিত, দর্শন ইত্যাদির উপর যাবতীয় প্রশ্নের সঠিক সমাধান দেয়, আমরা ধরে নেই ইসলাম সম্পর্কেও সে নিশ্চয়ই সঠিক সমাধান দেয়। আর ফেইসবুকে যেই ফ্রেন্ডের মুখে ঘন দাঁড়ি এবং মাথায় টুপি দেখা যায় এবং অনেক ইসলামিক আর্টিকেল শেয়ার করতে দেখা যায়, আমরা ধরে নেই ইসলামের ব্যাপারে তার মতামত নিশ্চয়ই সঠিক। আমাদের এই ধারণাগুলো কি ঠিক?

ভুয়া মুসলিম নাম নিয়ে লেখা বই, আর্টিকেল

ইন্টারনেট ভর্তি হাজার রকমের গুজব এবং ভুয়া গবেষণায় ভরা শত শত মতবাদ পাবেন, যা আপনার কাছে পড়লে মনে হবে বিরাট আলেমরা লিখেছে। কিন্তু ভালো করে খোঁজ নিলে দেখবেন আসলে সব ভুয়া। কু’রআনকে নিয়ে ইন্টারনেটে গবেষণা ধর্মী আর্টিকেলের কোনো অভাব নেই। বেশিরভাগই হয় বিধর্মীরা ভুয়া মুসলিম নাম দিয়ে (যেমনঃ ডঃ আব্দুল মাসিহ, যা একটি আরব খ্রিস্টান নাম, এর অর্থ ‘যীশুর দাস’) মুসলমানদেরকে বিভ্রান্ত করতে লিখেছে, না হয় কোনো অর্ধ শিক্ষিত মুসলিম, যার ইসলামের উপরে কোনো ডিগ্রি নেই, প্রাচীন কু’রআনের আরবি নিয়ে কোনোই জ্ঞান নেই, এমন সব মানুষ শুধুমাত্র নিজের যুক্তি এবং পর্যবেক্ষণ ব্যবহার করে, শুধুই কু’রআনের ইংরেজি অনুবাদের উপর ভিত্তি করে, আর্টিকেলের পর আর্টিকেল লিখেছে। এধরনের আর্টিকেল পড়তে যতই পাঠ মধুর হোক না কেন, এগুলো লেখার মুল উদ্দেশ্য হচ্ছে মুসলমানদের ভেতরে খুব সাবধানে মতপার্থক্য ঢুকিয়ে দেওয়া, যাতে করে মুসলমানরা একে অন্যের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক, বিভেদে জড়িয়ে পড়ে এবং একসময় মুসলিম জাতি বিভিন্ন দলে আলাদা হয়ে পড়ে। এধরনের আর্টিকেল পড়লে দেখবেন আপনার মনের ভিতরে ইসলামের বিভিন্ন নিয়ম-কানুন এবং রীতিনীতি নিয়ে প্রশ্ন, দ্বন্দ্ব এবং আল্লাহ্‌র সিদ্ধান্ত নিয়ে নানা ধরণের ’কিন্তু…’ বাড়তেই থাকবে। “কেন আল্লাহ এটা বলল? কেন আল্লাহ এরকম না করে ওরকম করলো না? কেন আল্লাহ শুধুই মেয়েদের জন্য এরকম, কিন্তু ছেলেদের জন্য ওরকম নিয়ম দিলো? …” এই হচ্ছে তাদের উদ্দেশ্য। আমরা মুসলমানরা নিজেদের মধ্যে যত কামড়াকামড়িতে ব্যস্ত থাকবো, একে অন্যকে ভুল প্রমাণ করতে যত বেশি সময় খরচ করবো, বিধর্মীদেরকে ঠিক তত কম খাটতে হবে ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করার জন্য।

ভুয়া রেফারেন্স দিয়ে লেখা আর্টিকেল

অনেক সময় দেখবেন আর্টিকেলে কোনো এক মুসলিম ওয়েব সাইটের আর্টিকেলের রেফারেন্স দেওয়া আছে, যেটা কোনো এক প্রসিদ্ধ মাওলানা/শেখ/ডঃ লিখেছেন। কিন্তু আসলে সেই ওয়েবসাইটটিও ওই প্রতারকদেরই বানানো এবং রেফারেন্স দেওয়া সেই আর্টিকেলটিও আসলে ওই প্রতারকদেরই লেখা, প্রসিদ্ধ কারো নাম নকল করে। বিখ্যাত লোকদের নাম ব্যবহার করে ডোমেইন কিনে ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে সেই বিখ্যাত মানুষদের নাম ব্যবহার করে নকল আর্টিকেল লেখাটা এক পুরনো কৌশল।

এছাড়াও অনেক আর্টিকেলে আপনি বানানো বা সন্দেহজনক রেফারেন্স পাবেন, যেই রেফারেন্সগুলো কোনো একাডেমিক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে গিয়ে পরীক্ষিত, পরিমার্জিত এবং অনুমোদিত হয়নি, অথবা কোনো যোগ্য আলেমের স্বীকৃতি পায়নি। শুধুমাত্র নির্ভরযোগ্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশ করা জার্নাল, প্রসিদ্ধ আলেমের লেখা বই এবং বিখ্যাত আলেমদের দ্বারা পরিচালিত ব্লগ বা ওয়েব সাইটগুলোর রেফারেন্সের সত্যতা যাচাই করে, বাকিটুকু পড়ুন

জীবন দর্শন

# জীবন দর্শন

হে মানুষ! একবার ভেবে দেখ তোমার এ জীবনটা কার দেওয়া? কিভাবে তুমি দুনিয়ায় এসেছ? অথচ ইতিপূর্বে তুমি উল্লেখযোগ্য কিছুই ছিলে না। তোমার মায়ের গর্ভে একটি পানিবিন্দু থেকে তোমার জন্ম। কে তোমাকে সেখানে মানুষের রূপ দান করল? কে তোমাকে সুন্দর অবয়ব ও উন্নত রুচি ও চিন্তাশক্তি দিয়ে দুনিয়ায় পাঠালো? কে তোমার ঐ ছোট্ট জড় দেহে আত্মার সঞ্চার করল? আবার কে ঐ আত্মাকে তোমার দেহ থেকে বের করে নিয়ে যাবে? দুনিয়ার সকল শক্তি দিয়েও কি তুমি তোমার আত্মাকে তোমার দেহ পিঞ্জরে আটকে রাখতে পারবে? ঐ রূহ যার হুকুমে এসেছে ও যার হুকুমে চলে যাবে তিনিই তো আল্লাহ। যার কোন শরীক নেই। তিনি তোমাকে সৃষ্টি করে তোমাকে অসহায়ভাবে দুনিয়ায় ছেড়ে দেননি। তিনি তোমার জীবনের পথের বিধান সমূহ পাঠিয়ে দিয়েছেন তাঁর নবী ও রাসূলগণের মাধ্যমে। যাদের সর্বশেষ হলেন আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম। হে অবিশ্বাসী মানুষ! সবকিছুকে তুমি অবিশ্বাস করলেও নিজের সৃষ্টিকে ও নিজের আত্মাকে তুমি কি অবিশ্বাস করতে পারবে? দেহ থেকে রূহটা চলে গেলে তুমি তো পোকার খোরাক হবে। কখনো কি ভেবে দেখেছ তোমার চোখের দৃষ্টিশক্তি কে দিল? অথচ তোমার পাশেই রয়েছে অসংখ্য দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। তোমাকে শ্রবণশক্তি কে দিল? অথচ তোমার পাশেই রয়েছে বহু শ্রবণ প্রতিবন্ধী। তোমাকে সুঠাম ও সুন্দর দেহ কে দিল? অথচ তোমার পাশেই রয়েছে অসংখ্য পঙ্গু, দুর্বল ও অসহায় মানুষ। তোমার সামনে রূযীর দুয়ার খুলে যাচ্ছে। অথচ তোমার বন্ধু শত চেষ্টায়ও তার অভাব মেটাতে পারছে না। অতএব তোমাকে স্বীকার করতেই হবে যে, সবকিছুর নিয়ামক একজন আছেন। যিনি অদৃশ্যে থেকে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন। তাঁর নির্দেশনার বাইরে যাবার ক্ষমতা তোমার নেই। যেমন পৃথিবী ও আকাশের সীমানা ছেড়ে বেরিয়ে যাবার ক্ষমতা তোমার নেই। রোগ-শোক, বার্ধক্য-জ্বরা কিছুই ঠেকাবার ক্ষমতা তোমার নেই। তুমি দু’হাত ছুঁড়ে বক্তৃতা করবে তোমার কল্পিত শত্রুর বিরুদ্ধে। আবার বাকরুদ্ধ হয়ে বিছানায় অবশ পড়ে থাকবে কিংবা বাক্য শেষ হবার আগেই তুমি মারা যাবে তাঁরই হুকুমে। সবই তোমার চোখের সামনে ঘটছে হর দিন। অথচ তোমার হুঁশ হয় না কোন দিন। 

হে নাস্তিক! বাকি টুকু পড়ুন